হাইকোর্টের বাতিল করা ২৬ হাজার প্রার্থীর চাকরি-বাতিলের নির্দেশ বহাল রাখতে বলল সুপ্রিম কোর্ট!!! নিয়োগ মামলা নিয়ে কি জানালেন বিচারপতিরা??
সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি মামলার আবার শুনানি হবে আগামী সোমবার। রাজ্য সরকার, এসএসসি ও শিক্ষা পর্ষদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। আজ তার শুনানি হয়েছে, পরবর্তী শুনানি হবে আগামী সোমবার।
সম্প্রীতি কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালে সংগঠিত হওয়া এসএসসির সব নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে অযোগ্যদের পাশাপাশি যোগ্যরাও চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই প্রশ্ন উঠছে – অযোগ্যদের নিয়োগ বাতিল হলেও যোগ্যদের কেন নিয়োগ বাতিল হবে? হাইকোর্টের এই কঠিন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য সরকার ,এসএসসি ও পর্ষদ।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ রেখেছিলেন এদিন শুনানিতে। তিনি কী কী প্রশ্ন তুলেছিলেন ? কেন নষ্ট করে ফেলা হয়েছে আসল ও এমআর সিট? এমন হলে যোগ্য এবং অযোগ্য আলাদা করা হবেই বা কেমন করে?? সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এত সংখ্যক চাকরি বাতিল করাকে একটা বড় সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন। এই ধরনের সিদ্ধান্ত আদালতকে তখনই গ্রহণ করতে হয় যখন আদালতের কাছে অন্য কোন উপায় থাকে না। তাই তিনি মনে করেছেন-” কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না , তাই পুরো নিয়োগ বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী অন্য কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবকাশ ছিল না।”
প্যানেলের নাম না থেকেও চাকরি করাটাকে বিশাল বড় দুর্নীতি বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট আরও প্রশ্ন তুলেছেন, ”টেন্ডার ছাড়াই নাইসাকে বরাত, মিরর ইমেজ ছাড়াই ওএমআর শিট নষ্ট। এটা তো জালিয়াতি, কীভাবে নিয়োগ হয়েছিল?”এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন- এই দুর্নীতিতে আসল সুবিধাভোগী কারা অর্থাৎ দুর্নীতির মূলচক্রি কারা ?কারা আদতে বেশি লাভবান হয়েছেন সেটাকে আগে খুঁজে বের করতে হবে। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়টিকে বের করার জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।
Nabanna Scholarship 2024 Apply Now: আবেদন করলেই এই স্কলারশিপে মিলবে 10000 টাকা।
এখনো পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি বক্তব্য ও পর্যবেক্ষণে যা জানা যাচ্ছে তা হল- সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল অতিরিক্ত শূন্যপদ যারা জড়িত আছেন, যারা মন্ত্রিসভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াই জড়িত ছিলেন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে। সেই অংশের শুনানি হবে সোমবার। কোন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বাকি অংশে। এদিন সুপ্রিম কোর্টে সাওয়াল জবাবের সময় বিতর্কিত চাকরি প্রার্থীদের আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন- “অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরির সিদ্ধান্ত, ভোটের মধ্যেই কি জেলে মন্ত্রীসভা”
অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে যাতে সবার চাকরি থাকে সে চেষ্টা করেছিল রাজ্য সরকার। আর ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে যারা অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক একটা জায়গা দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন। সেই কারণেই যারা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত তাদের সিবে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসার কথাও জানিয়েছেন তারা। সিবিআই কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এ অতিরিক্ত শূন্য পর তৈরিতে কাদের হাত রয়েছে সেটা খুঁজে বের করতে। আপাতত রায়ের সেই অংশে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বাকি অংশ অর্থাৎ হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের রায় এই অংশ অপরিবর্তিত রয়েছে।